হ্যালো 24 নিউজ।। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক মানববন্ধনে জি এম কাদের বক্তব্য দেন।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও তাঁর বিরুদ্ধে মামলার প্রকৃত ঘটনা বের করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ কালো আইন। ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ সরকার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নিবর্তনমূলক এই আইন পাস করে। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক মানববন্ধনে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। ফিলিস্তিনে হামলা বন্ধ এবং সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।
জি এম কাদের বলেন, যাঁরা সাংবাদিক রোজিনাকে হেনস্তা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির সুরক্ষা এবং কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের বলেন, ‘রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যে বর্বরতা হয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। অনুসন্ধানী প্রতিবেদক তথ্য সংগ্রহ করবেন, এতে অপরাধের কিছু নেই। অনুসন্ধানী প্রতিবেদকদের জন্যই আমরা জানতে পারি বিভিন্ন দপ্তরে লুটপাটের খবর।’ তিনি আরও বলেন, করোনাকালে মাস্ক, পিপিই, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় যে দুর্নীতি হয়েছে, তা অনুসন্ধানী প্রতিবেদকেরাই জাতির সামনে তুলে ধরেন। রোজিনা ইসলাম তাঁর পেশার স্বার্থেই তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তথ্য সংগ্রহ কখনো চুরি হতে পারে না।
অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমন কালো আইন জনস্বার্থবিরোধী। এখন প্রতীয়মান হচ্ছে, তথ্য অধিকার আইনটি শেষ পর্যন্ত সেভাবে প্রণয়ন করা হয়নি। তথ্য অধিকার আইনটিও ঔপনিবেশিক ধারাবাহিকতায় সরকার এবং জনগণ রাজা ও প্রজা—এই ধারণাকে লালন করা হচ্ছে। তথ্য অধিকার আইনকে যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করতে হবে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর হামলার সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ফিলিস্তিনিদের জীবন বাঁচাতে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী নিয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে জাতিসংঘের নেতৃত্বে শক্তি প্রয়োগ করে নিবৃত্ত করতে হবে ইসরায়েলকে। আলোচনার ভিত্তিতে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের উদ্যোগ নিতে হবে।
জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে, তা গণতন্ত্র ও স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর আঘাত। সাংবাদিক রোজিনাকে মুক্তি দিলেই হবে না, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। যাঁরা সাংবাদিক রোজিনার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। দলটির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা সত্য প্রকাশ করতে পারছেন না, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। গণমাধ্যমের যেসব কর্মী সত্য প্রকাশে এগিয়ে আসছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অবর্ণনীয় নির্যাতন নেমে আসছে।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সভ্য সমাজে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নির্মমতা কখনো সমর্থনযোগ্য নয়। ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের ক্ষতবিক্ষত দেহ, নারী ও শিশুদের আর্তনাদ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।মানববন্ধনে জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহিদুর রহমান, সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। (সুত্র প্রথম আলো পত্রিকা)