হ্যালো 24 নিউজ।। বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হতে পেরেছে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমরা চাই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত জাতির পিতার সোনার বাংলা হয়ে উঠুক।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার তৃতীয় দিনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সকল মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়। এটাই জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল । আসুন জাতির পিতার ১০১তম জন্মদিনে আমরা সেই প্রতিজ্ঞা নিই, জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছেন আমরা সেটা পূরণ করব।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। এ দেশের মানুষের প্রতি সব সময় তার আলাদা ভালোবাসা ও দায়িত্ব ছিল। তার পিতামাতা সব সময় তাকে সহযোগিতা করেছেন। আমার মা সব সময় তাকে প্রেরণা জুগিয়েছেন। কোনও কিছুর চাহিদা ছিল না। এজন্যই বঙ্গবন্ধু তার সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, রেসকোর্সের ঐতিহাসিক বক্তব্য ও ভাষা আন্দোলনে তার নেতৃত্বের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। তার ভাষণ প্রচারে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা ছিল। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, সবার সহযোগিতায় আজকে আমরা সেই সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পারছি। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ করতে পেরেছি। আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, মার্চ মাস বাঙালি জাতির জন্য এক স্মরণীয় মাস। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি হাজার বছর ধরে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ বাঙালি জাতিকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম আবাসভূমি এনে দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালের এই মার্চ মাসের ১১ তারিখে তিনি মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বপ্রথম কারাগারে অন্তরীণ হন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ পাকিস্তানি শাসকদের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন—এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা। এর সপ্তাহ আড়াই পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা। সমগ্র জাতিকে নির্দেশ দেন প্রতিরোধ যুদ্ধের, মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করার।
এ সময় প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শ্রীলঙ্কা আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একই ধরনের মনোভাব পোষণ করে এবং আমরা পরস্পরকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে থাকি। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু এবং তিনি সবসময়ই বাংলাদেশের পাশে অবস্থান করেন। আমিও চেষ্টা করি সেই বন্ধুত্বের প্রতিদান দিতে।
পিএইচ সেন্টারের বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ইশারার ভাষায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এদিনের অনুষ্ঠানের থিম ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’ পরিবেশন করা হয়।