হ্যালো 24 নিউজ।। ঢাকা, সোমবার, ০৮ আগষ্ট- ২০২২। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, সরকার নাকি আইএমএফ এর পরামর্শে জ্বালানী তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, আইএমএফ যদি মানুষ হত্যা করতে বলে, তাহলে কী সরকার মানুষ হত্যা করবে ? সরকার নজিরবিহীন ভাবে জ্বালানী তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এটাকে আমরা বলেছি নির্দয় সিদ্ধান্ত। মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকলে সরকার এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। জ্বালানী তেলের দাম বাড়ানো যেনো মরার উপর খারাপ ঘা।
আজ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় পার্টি কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। তেলে দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি। ১০ আগস্ট দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর দেশ পরিচালনার সময় পেট্রোল, অকটেন, ডিজেলের দাম কমিয়েছিলেন। এরশাদ তেলের উপর ট্যাক্স নিতেন না। তেল এমন জিনিস এর দাম বাড়লে জনগণের হৃদয়ে আঘাত করে। আমরা মানুষের হৃদয়ে আঘাত সহ্য করতে পারি না। তেলের দাম যখন নিম্নমূখী তখন হঠাৎ করে দাম বাড়াতে হলো ? বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানী তেলের মূল্য ১০৯ ডলার থেকে কমিয়ে ৮৯ ডলার হয়েছে, তখন কেন দেশে তেলের মূল্য বাড়াতে হবে ? তিনি বলেন যখন তেলের মূল্য কম ছিল, তখন হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে, সেই টাকা গেলো কোথায় ? লুটপাট হয়েছে ? করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এমন অবস্থায় জ্বালানী তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বল ও দুর্বিসহ করে তোলা হয়েছে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, তেলের দাম বাড়ালেই পরিবহণ শ্রমিকরা নিজেরাই এক ধরনের হরতাল ডেকে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়। তখন সরকার হাত-পা ধরে কিলোমিটারে ৩৫ থেকে ৪০ পয়সা বাড়িয়ে দেয়। আর পরিবহণ শ্রমিকরা কয়েকগুন বেশি টাকা আদায় করছে। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজী না হয়, তাকে পথে নামিয়ে দেয়া হয়। জনগণের এই দুর্ভোগ দেখার যেনো কেউ নেই।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, রেন্টাল, কুইক রেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে উৎপাদন ছাড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হচ্ছে। আমরা জ্বালানী খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি। তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক আর আইএমএফ-কে সকাল সন্ধ্যা গালাগাল করলো সরকার। আমাদের নাকি অনেক রিজার্ভ আছে, কিন্তু এখন কেন ঋণের জন্য ধর্ণা দিচ্ছে ? আমাদের এত রিজার্ভ গেলো কোথায় ?
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আগে যখন বলেছি দেশ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে। তখন আমাকে বলা হলো আমি নাকি মুর্খ। কিন্তু এখন এই অবস্থা কেন ? তিনি বলেন শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কিছু মিল রয়েছে আমাদের। সেখানেও স্বৈরশাসন চলছে, জনগনের কাছে শাসকদের কোন জবাবদিহি নেই আর মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট ও দুর্নীতি চলছে। তিনি বলেন, জ্বালানী তেলের মূল্য পূর্বের জায়গায় আনতে হবে। অনেক দেশের তেলের মূল্যবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু সেসব দেশে রেশন দেশে রেশন দেয়া হয় আর দুঃসময়ে নগদ টাকাও দেয়া হয় জনগণকে। সেসকল দেশে মানুষের প্রতি সরকারের জবাবদিহিতা আছে। আমাদের দেশের মানুষ প্রতিনিধি নির্বাচন করেন, এখন প্রতিনিধিরা রাজা হয়ে গেছেন, সাধারণ মানুষ হয়েছে প্রজা। আমরা আর রাজা চাইনা, দেশের মানুষ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় দেশের মানুষ।
এসময় গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন আরো বলেন, প্রত্যেকটি ব্যাংকে টাকা লুটপাট করা হয়েছে। ঋণের টাকা না দিলেও খেলাপি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে অনেককে। আমরা এই তালিকা চাই। সরকার বলছে, রিজার্ভ রয়েছে, কিন্তু আমরা দেখছি সরকার টাকার জন্য এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে।
আমরা শ্রীলঙ্কার মতো স্বৈরশাসন চাই না, মেগা প্রকল্প চাই না। মানুষের জন্য রেশন চালু করা হোক। তিনি বলেন, হাসপাতালের নামে বড় বড় ভবন করা হচ্ছে, সেখানে ডাক্তার নেই, যন্ত্রপাতি নেই। তাহলে কেনো ভবন করলেন ? লুটপাটের জন্যই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। লুটপাটের টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ৮০ হাজার কোটির টাকা সুদ দিতে হচ্ছে। ২/১ বছর পর সুদ ও আসল পরিশোধ করতে মহা বিপদের সামনে পড়বে দেশ। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা পূরণ না হলে ঋণ করে বেতন-ভাতা দিতে হবে।
জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, গতবাজেট অধিবেশনে সরকারের পক্ষ যেতে ফলা হলো, সব ঠিক আছে। ২ মাসের মধ্যে কি হলো ? আইএমএফ থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে কেনো। বিনিয়োগকারীরা জানেন না, তাদের কি হবে। কানাডার বেগমপাড়ায় হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার মানুষের কথা চিন্তা করছে না, কৃষকের কথা চিন্তা করছে না। তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পের খরচ কমান, মানুষের কথা ভাবুন। পার্টির চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করবো, চলুন আমরা রাজপথে থাকি, যতক্ষণ দাবী আদায় না হয়।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, মানুষের আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে এতো বেশি তেলের দাম আর কখনো বাড়েনি। আমরা সরকারের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করেছিলাম। তারা এতো লুটপাট, দুর্নীতি করবে এটা ভাবতেও পারিনি। গতকাল পরিকল্পনা মন্ত্রী বললেন, তারা আইএমএফ’র পরামর্শে দাম বাড়িয়েছে, অর্থমন্ত্রী বললেন আমরা আন্তর্জাতিক বাজার বেড়ে যাওয়ায় জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি করেছি। তাদের কারো কথার ঠিক নেই। প্রধানমন্ত্রী আপনি গণভবনে গন্ডির মধ্যে সঠিক অবস্থা জানতে পারছেন না। আপনার দলের লোকজন কিভাবে লুটপাট করছে। সঠিক অবস্থা জেনে নিন, না হলে জাতীয় পার্টি মাঠ থেকে সরে যাবে না।
কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেন, আমার মনে হয় দেশে সরকার নেই, সরকার থাকলে এভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে পারতো না। সরকার জনগণের কথা ভাবে না। সরকারকে ঘিরে রেখেছে কিছু আমলা ব্যবসায়ী। তাদের কথায় চলে সরকার। সমস্ত ব্যাংক লুটপাট করে বিদেশে টাকার পাহাড় গড়ছে।
কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, পল্লীবন্ধু জ্বালানী তেলের মূল্য কমিয়ে মানুষের প্রতি ভালোবাসা দেখেয়েছেন। জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারনে দেশের মানুষে আবস্থা চরম অবনতি হয়েছে। জ্বালানী তেলের মূল্য না কমালে আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, অনতিবিলম্বে তেলের দাম কমিয়ে দিন। না হলে জাতীয় পার্টি ঘরে বসে থাকতে পারে না। জাপা জনগণের রাজনীতি করে, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। জনগণের এই সংকটে জাতীয় পার্টি রাজপথে থাকবেই।
উক্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য- আলহাজ্ব সাহিদুর রহমান টেপা, ফকরুল ইমাম এমপি, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম সেন্টু, এড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আখতার এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, এমরান হোসেন মিয়া, মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মোঃ জহিরুল আলম রুবেল, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা- অধ্যাক্ষা রওশন আরা মান্নান এমপি, ড. মোঃ নূরুল আজহার শামীম, মনিরুল ইসলাম মিলন, সরদার শাহজাহান, মোঃ নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, মোঃ হারুন আর রশিদ, খান মোঃ ই¯্রাফিল খোকন, হেনা খানা পন্নি, এ্যাড. লাকী বেগম, নাজনীন সুলতানা, এড. মোঃ জহুরুল হক জহির, এড. মমতাজ উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান- মোঃ আরিফুর রহমান খান, নিগার সুলতানা রানী, শফিকুল ইসলাম শফিক, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, শেখ আলমগীর হোসেন, শফিউল্লাহ শফি, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, হুসেইন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, তারেক এ আদেল, আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, মোঃ জসিম উদ্দিন ভূইয়া, যুগ্ম মহাসচিব- গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মোঃ সামসুল হক, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মোঃ বেলাল হোসেন, একেএম আশরাফুজ্জান খান, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক- নির্মল দাস, মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ হুমায়ুন খান, এনাম জয়নাল আবেদীন, মোঃ আনোয়ার হোসেন তোতা, এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, মোঃ ফজলুল হক ফজলু, সৈয়দ মোঃ ইফতেকার আহসান হাসান, আবু জায়েদ আল মাহমুদ (মাখন) সরকার, কাজী আবুল খায়ের, পারভীন তারেক, সুমন আশরাফ, মোঃ জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য- মাসুদুর রহমান মাসুম, সুলতান মাহমুদ, এম.এ. রাজ্জাক খান, শাহদৎ কবীর চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, মোঃ মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, শাহদাত কবির চৌধুরী, এস.এম. আল জুবায়ের, ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, মোঃ গোলাম মোস্তফা, এড. খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, মিজানুর রহমান মিরু, জামাল উদ্দিন, খোরশেদ আলম খুশু খান, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক- মোঃ জাকির হোসেন মৃধা, নজরুল ইসলাম, নুরুল হক নুরু, দেলোয়ার হোসেন খান মিলন, মোঃ বাহাদুর ইসলাম ইমতিয়াজ, মোঃ আব্দুস সাত্তার গালিব, মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ জাকির হোসেন মিলন, মোঃ আবু সাদেক সরদার বাদল, মোঃ মুজিবুর রহমান মুজিব, এস.এম. মোক্তাদির তিতাস, শ্রী সুজন দে, মোঃ আখতার হোসেন দেওয়ান, এম.এ. ছোবহান, মোঃ আজহারুল ইসলাম সরকার, শরফুদ্দিন আহমেদ শিপু,শারমিন পারভীন লিজা, যুগ্ম সম্পাদক মন্ডলী- এ্যাড. মোঃ আবু তৈয়ব, শেখ মাসুক রহমান, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, মোঃ মোস্তফা কামাল, মোঃ শাহজাহান কবীর, অ্যাড. আব্দুর রশিদ, মোঃ দ্বীন ইসলাম শেখ, মোঃ শহিদ হোসেন সেন্ট,ু হাফেজ কারী ইছারুহুল্লা আসিফ, ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফাত্তাহ, ব্যারিস্টার সারা শাওলীন দিশা, ডাঃ সেলিমা খান, মোঃ ইব্রাহিম আজাদ, মীর শামসুল আলম লিপ্টন,নির্বাহী সদস্য- খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, মোছাঃ রিতু নূর, ফজলে এলাহী সোহাগ মিয়া, মোঃ আসাদুল হক, আবু সাঈদ স্বপন, মোঃ আব্দুস সাত্তার, এস.এম. শামছুল হুদা মিয়া, আবু সাঈদ আজাদ খুররম ভূঁইয়া, কাজী মামুন, বিএম নুরুজ্জামান, জাকির হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাবিুবুর রহমান সাংবাদিক, কাজী জালাল আহমেদ, মোঃ নাসিম উদ্দিন বায়েজিদ, আবু নাসের বাদল, এ্যাড. জিন্নাত আলী, শেখ মোঃ সারোয়ার হোসেন, ঝুটন দত্ত, মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান চৌধুরী, মোঃ শফিকুল ইসলাম দুলাল, আনোয়ারুল হোসেন, মোঃ নেওয়াজ আলী ভূঁইয়া, নজরুল ইসলাম সর্দার, ফয়সাল আহমেদ ভূইয়া, পারুল বেগম, তাসলিমা আকবর রুনা, মিথিলা রওয়াজা, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি ইব্রাহিম খান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক- আল-মামুন প্রমুখ।